ফাইনালে আজ আর প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিতে পারেনি মোটেও বায়ার্ন। তবে তা দিয়ে কী যায়-আসে! শিরোপা তো এসেছে, তাতে ইতিহাস তো গড়েছে হান্সি ফ্লিকের দলটা! মৌসুমে জার্মান লিগ ও জার্মান কাপের পর চ্যাম্পিয়নস লিগ – তিন শিরোপার তিনটিই জিতে ‘ত্রিমুকুট’ হলো বায়ার্নের। নিজেদের ইতিহাসের দ্বিতীয়বারের মতো। এর আগে ২০১৩ সালেও ত্রিমুকুট জিতেছিল বায়ার্ন।
লিসবনে আজ সে স্বপ্নের জ্বলাঞ্জলি হলো নেইমারের চোখের জলে। ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চ আরেকবার বুঝিয়ে দিল, ইউরোপের কূলীন হতে ঐতিহ্য লাগে। খুব কাছে এসেও নেইমার-এমবাপ্পেদের ফিরতে হলো খালি হাতে। জলমাখা শূন্য দৃষ্টিতে চেয়ে চেয়ে দেখতে হলো মাত্রই ইতিহাস রাঙানো বায়ার্ন মিউনিখের উচ্ছ্বাস। পিএসজিকে ১-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে ষষ্ঠবারের মতো ইউরোপসেরা হলো এই মৌসুমে বুলডোজারের মতো একের পর এক প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে আসা বায়ার্ন!ইউরোপে আর একটি ক্লাবেরই একের বেশিবার ত্রিমুকুট জেতার রেকর্ড আছে – কোয়ার্টার ফাইনালে যাদের ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত করে এসেছিল বায়ার্ন, সেই বার্সেলোনা – ২০০৯ ও ২০১৫ সালে।
পিএসজি যেখানে অনেক সুযোগ হারিয়ে হতাশ, বায়ার্নও কি কম সুযোগ হারিয়েছে? এই মৌসুমে আক্রমণে দারুণ ক্ষুরধার বায়ার্নের হয়ে ২১ মিনিটেই রবার্ট লেভানডফস্কির শট লাগে পোস্টে। দশ মিনিট পর লেভানডফস্কিরই হেড ফিরিয়ে দেন পিএসজির হয়ে চোট কাটিয়ে এই ম্যাচে একাদশে ফেরা গোলকিপার কেইলর নাভাস। ৬১ মিনিটে কিংসলে কোমানের দারুণ একটি শট ফিরিয়ে দেন পিএসজির এক ডিফেন্ডার।
এত কিছুর মাঝে বায়ার্ন আসল কাজটা করে নিয়েছে ৫৯ মিনিটে। দারুণ পাল্টা আক্রমণে উঠে ক্রস করেন কিমিখ। তবে বক্সের মাঝে লেভানডফস্কির উদ্দেশে নয়, পিএসজির ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে বাঁ প্রান্ত দিয়ে জেট প্লেনের গতিতে ছুটে আসতে থাকা কিংসলে কোমানের উদ্দেশে।
যাঁর জন্ম প্যারিসে। পিএসজির একাডেমিতে বেড়ে ওঠা। যাঁরা বাবা পিএসজির সমর্থক। সেই কোমান, যাঁকে এই ম্যাচে একাদশে একমাত্র বদল এনে দলে ঢুকিয়েছেন বায়ার্ন কোচ হান্সি ফ্লিক। সেই কোমানের উদ্দেশে কিমিখের মাপা ক্রস, তাতে দারুণ হেড। বল জালে! বায়ার্ন ১, পিএসজি ০!
এক প্যারিসিয়ানের গোল কেড়ে নিল পিএসজির প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের স্বপ্ন। আর বায়ার্নের হলো উৎসব।